জে, জাহেদ, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
‘আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। আজকের নবীন অফিসারেরাই হবে ২০৪১-এর সৈনিক, যারা বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলবে। লক্ষ্যস্থির রেখে আমরা এগিয়ে যাব।’
রবিবার (৪ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে চট্টগ্রামের ভাটিয়ারীর বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে (বিএমএ) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
এর আগে মিলিটারি একাডেমিতে ৮৩তম বিএমএ দীর্ঘমেয়াদি কোর্সের রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে আরও উপস্থিত ছিলেন সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘স্বাধীনের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন দায়িত্ব নেন। তার একটাই লক্ষ্য ছিল, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতীক সশস্ত্র বাহিনীকে তিনি আরও পেশাদার ও শক্তিশারী হিসেবে গড়ে তুলবেন। ১৯৭৪ সালে কুমিল্লা সেনানিবাসে মিলিটারি একাডেমির শুভ উদ্বোধন করেন বঙ্গবন্ধু। ১৯৭৫ সালের ১১ জানুয়ারি বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি প্রথম ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নবীন সামরিক অফিসারদের পেশাগত দক্ষতা, নৈতিক গুণাবলীসম্পন্ন এবং দেশপ্রেমের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজেদের গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছিলেন।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘১৯৭৫ সালের পর আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস হারিয়ে যেতে বসেছিল। বিকৃত করা হয়েছিল, দীর্ঘ ২১ বছর পর (১৯৯৬ সাল) আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে তা পরিবর্তন করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এবং আদর্শে যাতে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী গড়ে ওঠে, আমরা সেই পদক্ষেপ নিই। সামরিক বাহিনীকে আধুনিক করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিই।’
তিনি বলেন, ‘যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশ জাতির পিতা যখন গড়ে তুলছেন, রিজার্ভ মানি ছিল না এক টাকাও। তার সাথে সাথে কারেন্সি নোট ছিল না। তখনও সেনাবাহিনীর জন্য তিনি ট্যাংক কিনে আনেন এবং অন্যান্য সমরাস্ত্র ক্রয় করে অনেক শক্তিশালী সেনাবাহিনী গড়ে তোলার পদেক্ষপ নেন। তার পদাঙ্ক অনুসরণ করেই আমরা সেনাবাহিনীকে আরও যুগোপযোগী করার জন্য আমি ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ (এনডিসি) প্রতিষ্ঠা করি। সেনাবাহিনীতে ২০০০ সালে প্রথম দীর্ঘমেয়াদি কোর্সে নারীদের অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিই।’
সরকার প্রধান বলেন, ‘২০০৯ সালে দ্বিতীয়বার যখন সরকার গঠন করি, তখনই আমরা জাতির পিতা ১৯৭৪ সালে প্রতিরক্ষা নীতিমালা প্রণয়ন করে দিয়েছিলেন, তারই ভিত্তিতে ফোর্সেস গোল-২০৩০ প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়নের কাজ শুরু করি। ২০১৬ সালে বাংলাদেশ পিস বিল্ডিং সেন্টার (বিপিসি) প্রতিষ্ঠা করি। একই সাথে ২০১৮ সালে জাতীয় প্রতিরক্ষা নীতি প্রণয়ন করি।’
তিনি বলেন, ‘আজকে আমি অন্তত এটুকু বলতে পারি, আমরা দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর যে ফোর্সেস গোল বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি, সেই সাথে সাথে বাংলাদেশের জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্য স্থির করে আমাদের সুবর্ণজয়ন্তী পালন করেছি, ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী পালন করেছি। আমাদের সৌভাগ্য, ২০২১ সালে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে, আমরা উন্নীত হয়েছি। আমি সেই সাথে সাথে বলতে চাই, আমরা যেহেতু ২০২১ সালে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছি।’
সশস্ত্র বাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দুর্যোগ-দুর্বিপাক সব ক্ষেত্রেই সেনাবাহিনী যথাযথ ভূমিকা পালন করে। সশস্ত্র বাহিনীর সব সদস্যকে আমার আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম নগরের পলোগ্রাউন্ড মাঠে দুপুরে জনসভায় যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। জনসভা থেকে চট্টগ্রামের ৩০টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। দুপুর আড়াইটার দিকে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় তার পৌঁছানোর কথা। ৩টায় প্রধানমন্ত্রী জনসভায় ভাষণ দেবেন বলে দলীয় নেতাকর্মীরা জানান।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।